বিভাবকবিতা | অর্ণব পণ্ডা | Manikarnika.Pub
top of page

বিভাবকবিতা। অর্ণব পণ্ডা

Final Cover - Front.jpeg

বিষয় : কবিতা

প্রচ্ছদ : আঋব্ধক

নামাঙ্কন : সায়ন্তন সেন

মূল্য : ₹ ১৭৫

মণিকর্ণিকা প্রকাশনী

যোগাযোগ (কল ও হোয়াটসএ্যাপ) : 8240333741

Amazon Button PNG.png
Our Store Button PNG.png
আগ্রহী পাঠকদের জন্য বইটির পাঁচটি কবিতা এখানে দেওয়া হল।

চিহ্ন

 

বৃষ্টি থেমে যাওয়া বিকেল। তোমার বাড়ি ফেরার পথে

সূর্যাস্তের শেষ রশ্মিগুচ্ছ। কতদিন পর

তোমার মনে পড়ছে ‘দিনাবসান’ শব্দটির কথা

মনে পড়ছে মাটিতে বসে যাচ্ছে চাকা

আর কেউ টেনে তুলছে প্রাণপণ, নিজেকেই।

পাশ কাটিয়ে বন্ধুদের উচ্ছ্বাস

তোমাকে বিদায় জানাল একটি তৃষ্ণার্ত তারা

তুমি বাড়ি ফিরে দেখো

রুপোলি বেলুন নিয়ে খেলতে খেলতে শিশুটি ঘুমিয়ে পড়েছে

আর চাঁদ উঠে এসেছে ঝোপের বেড়ায়,

একটু কাজল যেন লেগে আছে ওতে!

 

ছেদ

 

ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না।

মনে হয় কষ্ট হবে, দুঃখ পাবে তুমি।

দেখো, মেলা ঘুরে ক্লান্ত আমাদের ছেলে

এখনও ঘুমিয়ে আছে, পাশে রাখা গণেশমুখোশ

গতরাত্রে খুব কেঁদেছিল।

তুমি ওকে বামনের দেশে নিয়ে যেও

ছোটো ছোটো স্বপ্নের দেশ

মেঘ ও মৃত্যুর কাছে যত অশ্রু জমা থাকে,

তার দুটি কণা ওকে দিও।

যেতে পা সরছে না

ঘাটে নৌকো একা বাঁধা ভোরে,

স্রোতে ভেসে যাচ্ছে গতজন্মের ফুল, বেলপাতা, খড়ের কাঠামো

রূপ

 

রোগাটে, ফরসা মেয়ে, চাষিঘরে জন্ম নাকি তার।

বিশ্বাসই হয় না যেন, অঘ্রানের রোদে সে

ধানের নূপুর পায়ে ছুটে গেছে, আর

কাঁটাঝোপে ছিঁড়েছে ফ্রকের ঝালর।

কীভাবে সে ঢাকা দেবে রক্ত, ভেজা পা

ভেবেছে আকুল, যদি দেখে ফেলে ব্রাহ্মণের ছেলে!

তাই সে নিচু চোখে কাটিয়েছে সমস্ত কৈশোর।

একদিন, ভয়ে ভয়ে চোখ তুলে দেখে

শুঁয়োপোকা আর নেই

একটি হলুদ প্রজাপতি উড়ে উড়ে ফিরে আসছে

ধানের ছড়ার কাছে।

খোলাচুল

 

তুমি জানলার কাছে এসে দাঁড়াও যখন

তোমাকে শান্তি বলি, বলি রোদে হেঁটে আসা অনাথ বালক

পা রাখল দূর্বাজঙ্গলে।

পাহারা ঘুমিয়ে থাকে, স্তব্ধতা ডানার প্রসার

সোনালি চিলের মতো কেঁদে যায় ফসলের মাঠে।

প্রহরী পায় না টের, ঘুম আসে কান্নার চোখে।

কে কাকে পাহারা দেয়? ঘুমন্ত মায়ের পাশে

খোলাচুল মেয়েটি ঘুমোয়।

তোমাকে আষাঢ় বলি, আর তোমাকে শ্রাবণ

শুধু এক লোককথা মুখে মুখে ফেরে সারা গ্রামে।

 

ঈশ্বর

 

বড়ো হতে গিয়ে থমকে দাঁড়াই মাঝে মাঝে

নিচু হয়ে আসে পিঠ

মায়ের শাড়ির ঘ্রাণ যত নিতে চাই

মনে হয়, দেরি হয়ে যাচ্ছে আমার

কাশফুল দুলে ওঠে ট্রেনের বাতাসে

যেভাবে বাংলামাস একটু আড়ালে

আমি তার মতো

বাবার প্রয়াণদিনে একা থাকি

নিজের চোখের জলে নিজেকে গড়িয়ে নিই

উঠে আসি, দেখি ঈশ্বর

তাঁর খড়ি-ফোটা হাত পেতে দাঁড়িয়ে আছেন

আমার মায়ের কাছে।

bottom of page