বারবার ভাগ হয় ভূখণ্ড। তার প্রাণ নেই। কিন্তু যারা পরিকল্পনা করে এই বাটোয়ারার তারা খেয়াল করে না একবার ভূভাগ হলেই সহস্র টুকরোয় ভেঙে যায় মানুষ। সেই কোন কাল থেকেই একথা বেমালুম ভুলে থাকছে বিভেদের কাণ্ডারিরা। এই বিস্মৃতির শিকার হচ্ছে ভরত সুবল গৌরী লক্ষ্মী মালতি। বিপ্লবী ভানুপ্রতাপ। এক শিবির থেকে অন্য শিবিরে পাক খাচ্ছে তাদের পথ। কখনও দেখা হয়ে যাচ্ছে পরস্পরে। তখন হ্যারিকেনের ক্ষীণ আলোয় পারাপার হচ্ছে দুর্ভাগ্যকাহিনির। ভারতবর্ষ ভাঙল দুভাগে। তারপর ভাঙল পাকিস্তান। কোথাও জ্বলে উঠল জাতিদাঙ্গার আগুন। আসামে ত্রিপুরায় কুকুরের মতো তাড়া খেল বাঙালিরা। ভাষাকে হাতিয়ার করে কেউ পেল স্বাধীনতা, সেই ভাষা-পরিচয়ই কারোর থেকে কেড়ে নিল ভিটেমাটি। পুড়ে ছাই হয়ে গেল ভানুপ্রতাপের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান। তবু মানুষ হাঁটছে। স্বপ্নের পথে, স্থায়ী বাসভূমির উদ্দেশে, আর-এক স্বাধীনতা সংগ্রাম গড়ে তোলার লক্ষ্যে অন্তহীন হেঁটে চলেছে মানুষ। এই উপন্যাস সেই যাত্রারই বৃত্তান্ত। হাজার ভাঙনের মধ্যেও অপরাজেয় জিজীবিষার ইস্তেহার।