top of page

আমার লাল সাইকেল । অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী

(গল্প)

ক্লাস টুর ছাত্র, গলুর চোখ দিয়ে লেখা হয়েছে এই চারটি গল্প। সে নিজেকে কীভাবে দেখে, নিজেকে কী ভাবে, চারপাশ নিয়ে, পরিবেশ নিয়ে, তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তার ভাবনাচিন্তা এখানে সে ব্যক্ত করেছে। বাচ্চা আসলে কার দলে, বাবা না মায়ের সেই নিয়েও নানান মজার উপস্থাপনা আছে। সে গাছ, পাখি, ফুল ভালবাসে। কিন্তু বর্তমান ক্রমবর্ধমান নগরায়নে সে কিভাবে তার মনের বিকাশ বাধাহত হচ্ছে, সে আহত হচ্ছে, একথাই বলা আছে গল্পে গল্পে। আর আছে বাচ্চাটির বাবার চরিত্র। এ নতুন নতুন নামে তার শিশুটিকে ডাকে, তাকে গাছপালা, প্রকৃতি চেনায়। তার বাবা-ই তার প্রকৃত বন্ধু।

গলু আসলে কার দলে? তার বাবার দলে না মায়ের দলে? নাকি সে এই দলাদলিতে অভ্যস্ত? নাকি সে ক্ষণে-ক্ষণে দল পাল্টায়?

জানতে গেলে পড়তেই হবে গলুর এই আত্মজীবনীখানা- আমার লাল সাইকেল।

Amar Lal Cycle.png

আমি একটা পাহাড় কিনব ________________________ ঠিক হল, একদিন আমি আর বাবা মিলে শিশির পড়া দেখতে যাব। কিন্তু মাকে বলা যাবে না। কারণ তাহলে মা যেতে দেবে না। কিন্তু মা ঠিক জেনে গেল। কী করে যে মা জেনে যায়, বাবা, আমি চুপিচুপি কোথায় যাচ্ছি— বুঝি না। মা অমনি বাধা দেয়। বলে, ‘এই ভর-সন্ধেতে ওকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছ?’ বাবা কেবল বলল, ‘এই একটু বাইরে যাব।’ মা বলল, ‘এখন শিশির পড়ছে। ওর ঠান্ডা লেগে যাবে। নিয়ে যাচ্ছ কেন? কী দরকার?’ বাবা আর কিছু বলল না। আমার হাত ধরে বেরিয়ে এল। রাস্তা ধরে হাঁটতে থাকল। আমাদের পাড়ার রাস্তা। শুনতে পাই, পিছনে মা গজগজ করছে, ‘কথা শুনল না, ছেলেটাকে নিয়ে গেল। কুয়াশা লেগে শরীর খারাপ হলে— তখন? সেই আমাকেই তো রাত জেগে মাথার গোড়ায় বসে থাকতে হবে।’ রাস্তা দিয়ে খানিক হেঁটে বাবা নেমে এল। এখানে অন্ধকার। এখানে আছে মাঠ। মাঠে আছে ঘাস। ঘাসের রং সবুজ। ঘাসের ভেতর নামল বাবা। বলল, ‘আয়।’ আমি বাবার পাশে গিয়ে চুপটি করে দাঁড়ালাম। একটু যে ভয় করছে না, তা নয়। এমনিতেই রাতের বেলায় কখনও আসিনি কিনা! তবে বাবা আছে তো, ঠিক সামলে নেবে। বাবা আমাকে মাঝে মাঝে বলে, ‘অন্ধকারকে চিনতে হয়।’ এবারে বাবা বলল, ‘এবার বোস। উবু হয়ে বোস। আমার মতন করে দ্যাখ—’ বলে বাবা নিজেই উবু হয়ে বসল। আমিও বসলাম দেখাদেখি। বললাম, ‘হয়েছে?’ বাবা বলে, ‘হ্যাঁ।’ আমি বলি, ‘এমনি করে আমি বসি, ইস্কুলে যখন পিটি হয়।’ বাবা বলে, ‘এবার নে, ঘাসের গায়ে হাত দে।’ আমি হাত দিই। কী নরম ঘাস! কী সুন্দর ঠান্ডা-ঠান্ডা! বেশ লাগে। বাবার সঙ্গে বেরুলে কত কিছু জানা যায়। বাবা বলে, ‘ঘাসের গায়ে হাত দিচ্ছিস?’ আমি বলি, ‘দিচ্ছি বাবা।’ ‘কী বুঝছিস?’ ‘কী বুঝব?’ ‘ঘাস ভিজে না?’ ‘ভিজে তো!’ ‘হাত ভিজে যায়?’ ‘যায় তো!’ ‘জেনে রাখ, এই হল শিশির।’ ‘শিশির… শিশির— আহা! তুমি কাঁদছ বাবা?’ ‘না রে। কাঁদব কেন?’ ‘আমার মনে হল, তুমি কাঁদছ!’ ‘দূর পাগল!’ ‘তুমি ডাব খাবে বাবা।’ ‘খাব।’ ‘তুমি টোটো চেপে যাওয়া আসা করবে বাবা।’ ‘করব।’ ‘আমি তোমায় পয়সা দোব।’ ‘তুই পাবি কোত্থেকে?’ ‘বারে! বড় হয়ে জেঠুর মতো আমিও বড়ো চাকরি করব। লন্ডন যাব। সেখানে গিয়ে একটা পাহাড় কিনব। তাতে মেপল গাছ পুঁতব একখানা। সেই গাছে খুঁটোবাঁধা হাঁস এসে বসবে। তোমাকে আর মাকে সেখানে নিয়ে যাব।’ অমনি বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে। কপালে চুমু খায়। আমি বাবার বুকে মাথা রেখে চোখ বুজে আদর খাই।

1111-removebg-preview.png

গল্পের বই উপহার পেতে কে না চায়!
এখনই Subscribe  করুন,
আর পেয়ে যান আপনার প্রথম বইটির মূদ্রিত মূল্যের ওপর ২৫% ছাড় 

Thanks for being our family!

  • Youtube
  • pngwing.com
  • 1111
  • tumblr
  • Instagram LOGO PNG2

+91 8240333741

Magic Seeds Books LLP

119 Abhay Patuli Lane, Shuksanatantala, Chandannagar 712136

Email us at: manikarnika.pub@gmail.com

For any other queries feel free to reach us at: 8240333741(Call/Whatsapp)

©2022 by Manikarnika Prakashani.

bottom of page