top of page

পারাবার

 

একদিন স্যারের বাড়িতে বসে অঙ্কখাতায় নতুন কবিতা লিখেছিলাম।

দেখতে পেয়ে, সেই লেখা পড়ে

রিন্টুকাকু মাকে বলেছিল, ওর বোধহয় কেউ আছে ...

 

একটু দূরে সাইকেল বার করছিলাম আমি।

 

মা বকেনি। বাড়ি ফিরে শুধু জিজ্ঞাসা –

কোথায় মন থাকে আজকাল?

 

চুপ করে আমি ছাদে গিয়ে দাঁড়াই

আকাশ যেন ঝাঁকড়া জামরুলগাছ – অন্ধকার ডালপালা,

সাদা দপ্‌দপে ফল

ওই দূরের শিকড় নেমে এসে ছুঁয়ে থাকে মুখ

 

মন কোথায়... মন কোথায়... বলতে বলতে দিগন্ত দিয়ে ছুটে যায় ট্রেন

 

খাতাটা মেলে দিই, কে নেমে এসে টিম্‌টিমে লন্ঠন

তুলে ধরে লেখায় –

 

‘ও আকাশ, একটা ডাকনাম দিও।

যে গোপন ডাকনাম দেয়, মনে হয় তার কাছে গিয়ে থাকি,

এখন জানলা দিয়ে তোমাকে দেখতে পাই

যেন অসুখের খবর-আনা চিঠি ভরে আছে

পূর্ণ নীরব এক আলো, আর তারা... তারা... তারা...

 

ও আকাশ, একদিন ডাকনামে ডেকো।

তোমার কাছে বসে সেইদিন দেখব গৃহস্থ জানলাখানি

শান্ত পাতায় ছুঁয়ে আছে লতাগাছ,

মশারির ভেতর ঘুমে বিভোর কটি তারা

 

দেখব ঘুমন্ত ঝাউবন, বাবার সৈকতে এসে

চুপ করে ছুঁয়ে থাকে জলে ভেজা মায়ের আঙুল’ ...


 

ঈশ্বর

 

বুড়ুর জন্ম সরস্বতী পুজোর দিন। ওর জন্মদিনে সন্ধেবেলা সকলে মিলে ছাদে বসে মুড়ি মেখে খাই। মুড়ির সঙ্গে শশা পেঁয়াজ টম্যাটো চানাচুর বাদাম। শুক্লাপঞ্চমীর ভরা আলোয় সে বড়ো রূপবান আকাশ। মাদুর বিছিয়ে বসে মা বাবা। আমি চিলছাদে ওঠার লোহার সিঁড়িতে। দাদুর জন্য একটা চেয়ার আসে। বুড়ু আর মণি কার্নিশ ছুঁয়ে ছুঁয়ে ঘোরে। বারবার ওদের বাটি রাখার শব্দ হয়। ছাদের আলো জ্বালি না। চাঁদের আলোয় আমাদের বাটিগুলো চক্‌চক্‌ করে। এমন মায়ার দিনে খুব সহজেই মানুষ মিশে যায় অন্ধকারে। মনে পড়ে তার – একদিন ওখানেই ছিলাম। অর্চনামাসি আসে। খুনসুটি করে। সাপের বাঁশির মতো জ্যোৎস্না একসময় তাকেও শান্ত করে দেয়। চিলেকোঠার ছাদ থেকে ভাইয়ের গান ভেসে আসে – ওরা পরকে আপন করে, আপনারে পর। হাওয়া দেয়। গান ভেঙে ভেঙে যায়। ভেঙে ধুলো হয়ে যায় এক- ছাদ মানুষের লুকোনো সব ফণা। হঠাৎ কারেন্ট চলে যায়। মণি উঠে গিয়ে হ্যারিকেন জ্বালিয়ে নিয়ে আসে। ভুলে যায়, শুক্লাপঞ্চমীর ছাদে আলো লাগে না মানুষের। ওই আলোটুকু আমাদের গৃহস্থ ঈশ্বর। চক্‌চকে বাটি হাতে আমরা তার কাছাকাছি বসি। চারধার নিঃঝুম হলে, বেশ টের পাই আমাদের ঘিরে ধিকিধিকি পুড়ে যাচ্ছে অন্ধকার। ওপরে আকাশভরা তারা, আর গান নিয়ে দাঁড়িয়ে আমার ভাই। আজও।

 

চিলেকোঠা

 

এত আলো চারদিকে, তবু ফুলের ভেতরকার হিম অন্ধকার

দিনভর জমে থাকে এইখানে

 

গা ছম্‌ছম্‌ করে

 

অকেজো টেলিফোন, সেলাইমেশিন, ভাঙা টেবিলফ্যান

আমরা ফিরে গেলে

ওরা কথা বলে

 

ঘষা-লাগা বাবার চশমার কাঁচ আম্মার ডাকে-না-ফেলা চিঠির

পাঠোদ্ধার করে এতদিনে

 

হলুদ সেই পোস্টকার্ডের গায়ে চ্যাপ্‌টা প্রজাপতি

তার শরীরের কণা কণা রঙ আর আয়ু দিয়ে

ঘিরে রাখে কাঙাল অক্ষরমালা

 

আজ আমি বাবার চশমা চোখে পড়ি

প্রবাসী কন্যাকে লেখা আম্মার না-পাঠানো কটি লাইন –

 

‘বুবু, একবার সাধ করে উঠোনের ধারে একটি

জামরুল গাছ পুঁতেছিলাম। তুমি তখন পেটে।

একদিন সে গাছে ফুল এল। গাছভরা ফুল।

ফুল থেকে ফল হওয়াই নিয়ম, আমরাও তো তাই চাই।

 

কিন্তু ওগাছের ফুল বড়ো জেদি। আমৃত্যু ফুটেই রইল।

ফল হল না কিছুতেই।

 

এ সংসারে যে ফুল নিয়ম মানে না, জেনো তার দুঃখ অনেক। তার শান্তি নেই ...’

 

রঙিন নুড়ির রাজা । শাশ্বত বন্দ্যোপাধ্যায়

SKU: RNR
₹100.00 Regular Price
₹80.00Sale Price
    No Reviews YetShare your thoughts. Be the first to leave a review.

    সম্পূর্ন ছবি দেখার জন্য বইয়ের ওপরে ক্লিক করুন

    1111-removebg-preview.png

    গল্পের বই উপহার পেতে কে না চায়!
    এখনই Subscribe  করুন,
    আর পেয়ে যান আপনার প্রথম বইটির মূদ্রিত মূল্যের ওপর ২৫% ছাড় 

    Thanks for being our family!

    • Youtube
    • pngwing.com
    • 1111
    • tumblr
    • Instagram LOGO PNG2

    +91 8240333741

    Magic Seeds Books LLP

    119 Abhay Patuli Lane, Shuksanatantala, Chandannagar 712136

    Email us at: manikarnika.pub@gmail.com

    For any other queries feel free to reach us at: 8240333741(Call/Whatsapp)

    ©2022 by Manikarnika Prakashani.

    bottom of page